বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:৩২ অপরাহ্ন

কারখানা গুঁড়িয়ে শিশুপার্কের উদ্বোধন করলেন কাদের মির্জা

নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে কারখানা উচ্ছেদ করে শিশুপার্কের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করলেন বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা।

শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের রামদী গ্রামে শিশুপার্কের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন তিনি।

এ সময় আবদুল কাদের মির্জা বলেন, আমাদের দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষা আজ বাস্তব। কোম্পানীগঞ্জে কোনো শিশুপার্ক নেই। যার কারণে শিশুরা আনন্দ উল্লাস করতে পারে না। তাই একটি আধুনিক শিশুপার্ক নির্মাণ জরুরি।

ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করে কাদের মির্জা বলেন, শিশুপার্ক নির্মাণে অনেকে আমাকে সহযোগিতা করছেন। তবে একটি আধুনিক শিশুপার্ক নির্মাণ করতে অনেক টাকার প্রয়োজন। আমাদের ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী যদি সহযোগিতা করেন তাহলে আধুনিক শিশুপার্ক নির্মাণ সম্ভব।

এর আগে শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টার দিকে পৌরসভার কর্মীরা দুটি এক্সকাভেটর দিয়ে আসবাবপত্র কারখানা উচ্ছেদ করে সেখানে ‘শিশুপার্কের জন্য নির্ধারিত স্থান’ লেখাসংবলিত একটি সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেয়।

এদিকে কারখানার মালিক ফিরোজ আলম অভিযোগ করেন, তারা ১৯৯০ সাল থেকে করালিয়া মৌজার ডিএস ১৩৩ নম্বর খতিয়ানের ৫৫৮ নম্বর দাগের ১৭ শতাংশ জমির ক্রয়সূত্রে মালিক। জমি কেনার পর তারা সেখানে ‘হুমায়ুন টিম্বার মার্সেন্ট অ্যান্ড স মিল’ প্রতিষ্ঠা করেন। সম্প্রতি বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আকস্মিকভাবে ওই জমি ‘খাস’ দাবি করেন এবং জমি থেকে তাদের স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশনা দেন।

ফিরোজ আলম আরও বলেন, ওই আদেশের বিরুদ্ধে তারা জেলা জজ আদালতে গত ২৫ মার্চ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। আদালত মামলা আমলে নিয়ে বিরোধীয় ভূমিতে বিবাদী পক্ষের প্রবেশে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। কিন্তু আদালতের আদেশ অমান্য করে কাদের মির্জার নেতৃত্বে প্রায় ২০০ অনুসারী ও পৌরসভার এক্সকাভেটর মেশিন গিয়ে তাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানটি ভাঙচুর করে গুঁড়িয়ে দেয়। এ সময় তারা প্রতিষ্ঠানের মূল্যবান কাঠসহ অনেক মালামাল পৌরসভার গাড়ি বোঝাই করে নিয়ে যান।

কারখানার মালিক ফিরোজ আলমের বড় ভাই হুমায়ুন কবিরকে ২ সেপ্টেম্বর দেওয়া পৌরসভার চিঠিতে বলা হয়, ‘আপনি সরকারি খাস সম্পত্তির ওপর বিধিবহির্ভূতভাবে স্থাপনা নির্মাণ করেছেন। জনস্বার্থে উক্ত জায়গার ওপর বসুরহাট পৌরসভার শিশুপার্ক নির্মাণের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে। নোটিশ প্রাপ্তির সাত দিনের মধ্যে আপনার বিধিবহির্ভূত স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য পুনর্নির্দেশ দেওয়া হলো।’

এর আগে গত ২২ মার্চ একই বিষয়ে আরেকটি নোটিশ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে এবং স্থাপনা সরিয়ে না নিলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে মেয়র আবদুল কাদের মির্জা বলেন, কারো ব্যক্তিগত সম্পত্তির ওপর শিশুপার্ক নির্মাণ কাজ শুরু হয়নি। সরকারি খাস সম্পত্তির ওপর বিধিবহির্ভূতভাবে আসবাবপত্রের কারখানাটি নির্মাণ করা হয়েছে। দুই বার নোটিশ দিয়ে স্থাপনা সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হলেও তারা কারখানাটি সরিয়ে নেয়নি। তাই উচ্ছেদ করা হয়েছে। সেখানে শিশুপার্ক নির্মাণের কাজের উদ্বোধন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান বলেন, কিছু দিন আগে পৌরসভা থেকে একটি শিশুপার্ক নির্মাণের প্রস্তাব তার কাছে পাঠানো হয়েছিল। তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ইউএনওকে ওই প্রস্তাবের চিঠিটি পাঠিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু মেয়রের প্রস্তাবিত শিশুপার্কের স্থান কোনটি, তা এই মুহূর্তে বলতে পারছি না। বসুরহাটের ওই জায়গাটি খাস কি না, কাগজপত্র না দেখে বলা যাবে না।

উদ্বোধনের সময় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ইউনুসসহ পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com